রাজধানীর প্রাণকেন্দ্রে “পাড়া উৎসব”

নিয়মিত বাৎসরিক আয়োজনের ধারাবাহিকতায় রাজধানীর প্রাণকেন্দ্রে গুলশান এলাকায় আয়োজিত হয়ে গেল “পাড়া উৎসব"। এ উপলক্ষে রাখা হয়েছিল আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সঙ্গে অত্যন্ত সম্পৃক্ত বিভিন্ন আয়োজন। এলাকায় বসবাসরত নাগরিকগণ এই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে আনন্দে মেতে উঠেছিলেন আর সেই সঙ্গে প্রতিবেশি ও এলাকার অন্যান্য বাসিন্দাদের সঙ্গে এদিন তৈরি হয়েছে তাদের অমূল্য স্মৃতি।

“হিরোস ফর অল" নামের অলাভজনক সেবামূলক প্রতিষ্ঠান আর সেই সঙ্গে গুলশান সোসাইটি ও ডিনসিসি যৌথভাবে গুলশানের আবাসিক এলাকায় নতুন করে প্রাণের সঞ্চার করতে এই দিনব্যাপী অনুষ্ঠান আয়োজন করে৷ “হিরোস ফর অল" এর প্রতিষ্ঠাতা রেহনুমা করিম পুরো অনুষ্ঠানের সার্বিক আয়োজনে নেতৃত্ব দেন। হিরোস ফর অল ইনক এর স্বেচ্ছাসেবকরা যেমন এদিন অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন তেমনি পর্দার অন্তরালে থেকে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন গুলশান সোসাইটি, সাজ্জাদ সোহেল, তানভীর আহমেদ এবং ডিএনসিসি টিমের শায়ান সেরাজ জামান। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টাতেই এদিনের অনুষ্ঠানটি সফল হয়েছে৷ দেশের বরেণ্য অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন এবং সালমা আদিল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সালমা আদিল এদিনের পুরো আয়োজনে সক্রিয় ভাবে উপস্থিত ছিলেন। সার্বিক সহযোগিতা ও উৎসাহ প্রদান করেছেন সরফরাজ আনোয়ার উপল আর “মনের মানুষ" এর পক্ষ হতে অনুষ্ঠানে জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত গান আছেন আমার মোক্তার গানের প্রতি সম্মান জানিয়ে তা পরিবেশন করা হয়।

ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম এই অনুষ্ঠানে সম্মানিত প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, " আমরা একটি বৈষম্যমুক্ত নগরী চাই। আমার লক্ষ্য হচ্ছে সকলকে সঙ্গে নিয়ে এই নগর গড়ে তুলতে যেখানে সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণ থাকবে। এই পাড়া উৎসব প্রতিবেশিদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক জোরদার করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে, সামাজিক সম্পর্কগুলোকে করবে আরও দৃঢ়। আমাদের শিশুরা খেলার সুযোগ পাচ্ছেনা। তাদের কোন বন্ধু নেই। আর সেজন্যই এমন উদ্যোগ অত্যন্ত প্রয়োজন। এতে সমাজে অন্যায় ও অস্থিরতা হ্রাস পাবে৷ আমরা ঠিক এরকম একটি ঢাকা গড়ে তুলতে চাই সবার জন্য।

সালমা আদিল ফাউন্ডেশন এবং সেফ হ্যান্ডস এর প্রতিষ্ঠাতা, মার্কিন দূতাবাসের সাবেক কর্মকর্তা লায়ন সালমা আদিল এমজেএফ এই পাড়া উৎসবে স্থানীয় বাসিন্দাদের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি দেখে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “এলাকার সকলে মিলে একসঙ্গে ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যপূর্ণ এই আয়োজনটি উপভোগ করছে, দেখে খুব ভালো লাগছে। এর মাধ্যমে এই এলাকার সকলের মধ্যে সামাজিক বন্ধন সুদৃঢ় হবে।"

এই অনুষ্ঠানে ছিল খাবারের আয়োজন, খেলা, জাদু প্রদর্শন, ছবি আঁকা, গান-বাজনা, কৌতুক অভিনয়, লাঠি খেলা, শারীরিক কসরত, পথ নাটক ইত্যাদি। এলাকার সকলের জন্য ছিল ট্যালেন্ট শো।অত্যন্ত সফল ও অনন্য অনুষ্ঠানটি কিছু লক্ষ্য সামনে রেখে আয়োজিত হয়। পরস্পর বিচ্ছিন্ন আমাদের এই সমাজে সকলের মাঝে সংযোগ ঘটানোই ছিল এর উদ্দেশ্য। অল্প সময়ে অমূল্য কিছু স্মৃতি তৈরি করাই ছিল এর পেছনের মূল ভাবনা। এরকম উৎসব প্রতিবেশিদের মধ্যে মায়া, মমতা ও সহযোগিতা জাগিয়ে তুলবে আর নিজের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে নিয়ে করবে গর্বিত।

Leave a Reply